শিরোনাম
বাদামি গাছ ফড়িং আক্রমণে কৃষক ভাইদের করনীয়
বিস্তারিত
বাদামী গাছ ফড়িং
বাচ্চা ও পূর্ন বয়স্ক পোকা একসঙ্গে ধান গাছের গোড়ায় বসে রস চুষে খায়। ফলে ধান গাছ দ্রুত শুকিয়ে খড়ের মত হয়ে যায়। অল্প আক্রান্ত খেত বাজ পোড়ার মত সময়ের মধ্যে সম্পূর্ন ধান খেত নষ্ট হয়ে যায়।
যে সমস্ত ধানের জাতে বাদামী গাছফড়িং প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই সে সব জাতের ধানে এরা খুব তাড়াতাড়ি বংশ বৃদ্ধি করে, ফলে এ পোকার সংখ্যা এত বেড়ে যায় যে, আক্রান্ত ক্ষেতে বাজ পড়ার মত হপারবার্ণ - এর সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত গাছগুলো প্রথমে হলদে এবং পরে শুকিয়ে মারা যায়। বাদামী গাছফড়িং গ্রাসিস্টান্ট, র্যাগেটস্টান্ট ও উইল্টেডস্টান্ট নামক ভাইরাস রোগ ছড়ায়। কিন্তু আমাদের দেশে এখনও এ সমস্ত রোগ দেখা যায়নি। লম্বা পাখাবিশিষ্ট পূর্ণবয়স্ক বাদামী ফড়িংগুলো প্রথমে ধান ক্ষেত আক্রান্ত করে। এরা পাতার খোলে এবং পাতার মধ্য শিরায় ডিম পাড়ে। ডিমগুলোর ওপর পাতলা চওড়া একটা আবরণ থাকে। ডিম ফুটে বাচ্চা (নিমফ) বের হতে ৭-৯ দিন সময় লাগে। বাচ্চাগুলো ৫ বার খোলস বদলায় এবং পূর্ণবয়¤ক ফড়িং এ পরিণত হতে ১৩-১৫ দিন সময় নেয়। প্রথম পর্যায়ের (ইন¯টার) বাচ্চাগুলোর রং সাদা এবং পরের পর্যায়ের বাচ্চাগুলো বাদামী। বাচ্চা থেকে পূর্ণবয়¯ক বাদামী গাছফড়িং ছোট পাখা এবং লম্বা পাখা বিশিষ্ট হতে পারে। ধানে শীষ আসার সময় ছোট পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাই বেশী থাকে এবং স্ত্রী পোকাগুলো সাধারণত: গাছের গোড়ার দিকে বেশি থাকে। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে লম্বা পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাও বাড়তে থাকে, যারা এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় উড়ে যেতে পারে।
বাদামি গাছফড়িং দমন ব্যবস্থা
# যে সব এলাকায় সব সময় বাদামী গাছফড়িং এর উপদ্রব হয় সে সব এলাকায় তাড়াতাড়ি পাকে (যেমন চান্দিনা, ব্রিধান ৩৫) এমন জাতের ধান চাষ করা।
# জমিতে পোকা বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলা।
# ক্ষেতে শতকরা ৫০ ভাগ গাছে অন্ততঃ একটি মাকড়সা থাকলে কীটনাশক প্রয়োগ না করা।
# শতকরা ৫০ ভাগ ধান গাছে ২-৪টি ডিমওয়ালা স্ত্রী পোকা অথবা ১০টি বাচ্চা পোকা প্রতি গোছায় পাওয়া গেলে
অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা।
১। নিয়মিতভাবে গাছের গোঁড়া পর্যবেক্ষন।
২। উপদ্রব এলাকা যেমন বৃহত্তর রাজশাহী, ময়মনসিংহ, বরিশাল, খুলনা ও চট্রগ্রাম অঞ্চলে প্রতিরোধশীল জাত ব্রি ধান৩৫ অথবা আগাম জাত যেমন, ব্রি ধান৩৩, ও বিআর৬ এর চাষ করুন।
৩। উপদ্রুত এলাকায় ধানের চারা ঘন করে না লাগিয়ে ২০ x ২৫ সেন্টিমিটার দূরে দূরে লাগান।
৪। জমিতে ইউরিয়া সারের উপরি-প্রয়োগ বন্ধ করুন।বিঘা প্রতি ৫কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করা।
৫। জমিতে গড়ে প্রতি কুশিতে ১.৫ টি বাচ্চা ও পূর্ণবয়স্ক গর্ভবতী পোকা থাকলে কীটনাশক ব্যবহার করুন। কীটনাশক অবশ্যই গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করতে হবে।
তালিকাঃফলে বাদামী গাছ ফড়িং দমন এর জন্য উক্ত কীটনাশক গুলো ধান ক্ষেতে ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সপসিন,প্লেনাম,জাদীদ,টিডো,এসাটাফ,এ্যাডক্লেপ,কনফিডর,গেইন,কুইনফেট,কেমোমেথ্রীন,ইমিটাফ,রেইস,প্লাটিনাম,ম্যাকজিমা,রেডিয়াস,পিলারথেন ও বিউটি অথবা ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের যে কোন কীটনাশক।